নির্বাহী সারসংক্ষেপ
১. বাংলাদেশ একটি উদীয়মান, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র। এই জাতির লক্ষ্য ‘রূপকল্প ২০২১’-এ উল্লেখ করা হয়েছে যে, আগামী এক দশকে দেশটিতে ক্ষুধা, বেকারত্ব, অশিক্ষা, বঞ্চনা ও দারিদ্র্য থাকবে না। দেশে বিরাজ করবে সুখ, শান্তি, সম্প্রীতি ও সমৃদ্ধি। সংবিধানের প্রস্তাবনা অনুযায়ী গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ‘এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা’ হবে, ‘যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত’ হবে। সরকার বিশ্বাস করে যে, এই লক্ষ্য পূরণে সুশাসন প্রতিষ্ঠা রাষ্ট্রের অবশ্য-কর্তব্য, এবং সেই সুশাসন প্রতিষ্ঠায় দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিপালন একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য পরাকৌশল। ঐতিহ্যগতভাবে লব্ধ এবং বর্তমান সরকারের আমলে গঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং প্রণীত আইনকানুন, বিধিবিধান ও পদ্ধতি সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। কিন্তু কেবল আইন প্রয়োগ ও শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে দুর্নীতি নির্মূল করা সম্ভব নয়, তার জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক ক্ষেত্রে একটি আন্দোলন গড়ে তোলা, যাতে নাগরিকগণ চরিত্রনিষ্ঠ হয়, রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ও সুশীল সমাজের প্রতিষ্ঠানসমূহে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা পায়। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই একটি কৌশল-দলিল হিসাবে ‘সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়: জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
২. ২০০৮ সালের নির্বাচনে ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য দলের নির্বাচনী ইশতেহারেও ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণের’ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত হয়েছিল। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সরকার সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বহুবিধ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। বিগত তিন বছর নয় মাসে সরকার ১৮০ টি আইন ও ৩৩টি কর্মকৌশল ও নীতি প্রণয়ন করেছে। দুর্নীতি দমনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম যেসব আইন প্রণীত হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’, ‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯’, ‘সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯’, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯’, ‘চার্টার্ড সেক্রেটারিজ আইন, ২০১০’, ‘জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন, ২০১১’, ‘মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২’, ‘মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২’, ‘প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২’, ইত্যাদি। এক্ষণে সুশাসন প্রতিষ্ঠায়, এবং আরও সুনির্দিষ্টভাবে দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় এসব আইনের প্রয়োগ ও কার্যকারিতার মূল্যায়ন প্রয়োজন, তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও সংযুক্ত উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। সেইসঙ্গে এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ কর্মধারা নির্ধারণও জরুরি হয়ে পড়েছে। এই শুদ্ধাচার কৌশলটি সে লক্ষ্যেই গৃহীত একটি উদ্যোগ । দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা এবং তাদের ভবিষ্যৎ-কৌশল চিহ্নিতকরণ ও বাস্তবায়নে এই কৌশল-দলিলটি সহায়ক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৩. বাংলাদেশ জাতিসংঘের United Nations Convention Against Corruption (UNCAC)-এর অনুসমর্থনকারী দেশ। দুর্নীতি নির্মূলের জন্য ‘ফৌজদারী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে দুর্নীতির প্রতিকার ছাড়াও দুর্নীতির ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণকে’ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এই কনভেনশনে। বাংলাদেশের ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১১-২০১৬) এবং ‘রূপকল্প ২০২১’ এবং ‘পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২০২১’-এও সমধর্মী কর্মসূচি চিহ্নিত করা হয়েছে। এই দলিলে বিধৃত কর্ম-পরিকল্পনাসমূহ উল্লিখিত কনভেনশন ও পরিকল্পনাসমূহের লক্ষ্য অর্জনে প্রণীত একটি সমন্বিত কৌশল।
৪. শুদ্ধাচার বলতে সাধারণভাবে নৈতিকতা ও সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণগত উৎকর্ষ বোঝায়। এর দ্বারা একটি সমাজের কালোত্তীর্ণ মানদণ্ড, নীতি ও প্রথার প্রতি আনুগত্যও বোঝানো হয়। ব্যক্তি-পর্যায়ে এর অর্থ হল কর্তব্যনিষ্ঠা ও সততা, তথা চরিত্রনিষ্ঠা। এই দলিলটিতে শুদ্ধাচারের এই অর্থই গ্রহণ করা হয়েছে।
৫. শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তেমনই পরিবার, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও এনজিও এবং শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, সাকুল্যে অরাষ্ট্রীয় হিসাবে চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানসমূহের ভূমিকাও সমধিক গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ তিনটি অঙ্গে বিভক্ত – বিচার বিভাগ. আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগ। তারা স্বাধীন সত্তায় তাদের নিজস্ব কর্মবৃত্তে যথাক্রমে বিচারকার্য, রাষ্ট্রের আইন প্রণয়ন ও নির্বাহীকার্য পরিচালনা করে। সংবিধান অনুযায়ী গঠিত আরও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন, নির্বাচন কমিশন, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশন, ন্যায়পাল, যারা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে গঠিত এবং যারা বাজেট ও আর্থিক নিয়মাবলি অনুসরণ সাপেক্ষে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে তাদের কর্মসম্পাদন করে। অন্য আরও কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা আলাদা আইনের মাধ্যমে সৃষ্ট, এবং ‘সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ’ হিসাবে অভিহিত; যেমন, দুর্নীতি দমন কমিশন, তথ্য কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, ইত্যাদি। সংবিধানে স্থানীয় শাসনের যে-ব্যবস্থা নির্দেশ করা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাম ও শহরের স্থানীয় শাসন প্রতিষ্ঠান যেমন, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন গঠন করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের সকলের ভূমিকাকেই গুরুত্ব প্রদান জরুরি।
৬. এই দলিলটিতে রাষ্ট্র ও সমাজে দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আইনকানুন ও বিধিবিধানের সুষ্ঠু প্রয়োগ, তাদের পদ্ধতিগত সংস্কার ও উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং সর্বোপরি এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত এবং তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের চরিত্রনিষ্ঠা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গৃহীতব্য কার্যক্রম চিহ্নিত করা হয়েছে। যেসব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে তারা হল: রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১. নির্বাহী বিভাগ ও জনপ্রশাসন, ২. জাতীয় সংসদ, ৩. বিচার বিভাগ, ৪. নির্বাচন কমিশন, ৫. অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, ৬. সরকারি কর্ম কমিশন, ৭. মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, ৮. ন্যায়পাল, ৯. দুর্নীতি দমন কমিশন, ১০. স্থানীয় সরকার এবং অরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১. রাজনৈতিক দল, ২. বেসরকারি খাতের শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ৩. এনজিও ও সুশীল সমাজ, ৪. পরিবার, ৫. শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও ৬. গণমাধ্যম। এই কৌশলটির রূপকল্প হল ‘সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা’ – রাষ্ট্র এবং সমাজ হিসাবে এটিই বাংলাদেশের গন্তব্য; আর সেই গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য রাষ্ট্রে ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সবচেয়ে জরুরি কাজ। ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’ সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশল হিসাবে বিবেচিত এবং সরকার গুরুত্বপূর্ণ একটি অবলম্বন হিসাবে এটি প্রণয়ন করছে।
৭. উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অব্যাহতভাবে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করে চলেছে। এগুলিতে পদ্ধতিগত সংস্কারও সাধন করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে এসব কার্যক্রম ও সংস্কার-উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় সাধন ও এগুলির একটি সম্মিলিত রূপ প্রদানের প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে – এই কৌশলটিতে সে উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে। চিহ্নিত সকল প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের কৃত্য, কৃতি, বিবর্তন, বর্তমান অবস্থা ও তাদের চ্যালেঞ্জ তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রত্যেকের জন্য আলাদা কর্মপরিকল্পনা বিধৃত করা হয়েছে। কর্মপরিকল্পনায় বাস্তবায়নকাল হিসাবে স্বল্পমেয়াদ (এক বছরের মধ্যে), মধ্যমেয়াদ (তিন বছরের মধ্যে) এবং দীর্ঘমেয়াদ (পাঁচ বছরের মধ্যে) চিহ্নিত করা করা হয়েছে। এই দলিলটিকে নীতিগতভাবে একটি বিকাশমান দলিল হিসাবে গণ্য করা হচ্ছে এবং এতে সময়ের বিবর্তনে এবং প্রয়োজনের নিরিখে নতুন সিদ্ধান্ত ও কার্যক্রম গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে । প্রতিটি প্রতিষ্ঠান/প্রতিষ্ঠানগুচ্ছের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ছকে কার্যক্রম (intervention) চিহ্নিত করা হয়েছেঃ
ক্রমিক |
কার্যক্রম |
কর্মসম্পাদন সূচক |
সময় |
দায়িত্ব |
সহায়তাকারী |
৮. মূলত জনপ্রশাসনের মাধ্যমেই সরকার এই কৌশলটি বাস্তবায়ন করবে। কৌশলটিতে রাষ্ট্রের অন্য দুটি অঙ্গ – বিচার বিভাগ ও আইনসভা, এবং সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের জন্যও কর্মসূচি প্রস্তাব করা হয়েছে। শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার উচ্চ গুরুত্ব বিবেচনা করে এসব প্রতিষ্ঠান স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে চিহ্নিত পথরেখা অনুসরণে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন এসব প্রতিষ্ঠানকে কারিগরি সহায়তা ও সম্পদ সরবরাহ করবে। সুশীল সমাজ ও শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও জনপ্রশাসন সহযোগিতা প্রদান করবে এবং কার্যক্রম পরিবীক্ষণ করবে। ‘শুদ্ধাচার কৌশল’টি বাস্তবায়নের জন্য একটি ‘জাতীয় শুদ্ধাচার উপদেষ্টা পরিষদ’ গঠন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদের কয়েকজন সদস্য, কয়েকজন আইনপ্রণেতা, সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিনিধি, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সচিব, এনজিও ও সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম এবং ব্যক্তিখাতের শিল্প ও বাণিজ্যিক-প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রতিনিধি সমন্বয়ে এই উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হবে। সুশীল সমাজ, শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমের সদস্যগণ পরিষদে সরকার কর্তৃক মনোনীত হবেন। এই উপদেষ্টা পরিষদ বছরে অন্ততপক্ষে দু’বার সভায় মিলিত হবে এবং শুদ্ধাচার অনুশীলন পর্যালোচনা ও পরিবীক্ষণ করবে এবং এ সম্পর্কিত দিক্-নির্দেশনা প্রদান করবে। এই কৌশল-দলিলটির আওতায় চিহ্নিত কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকৃতভাবে বাস্তবায়িত হবে। এতে চিহ্নিত দায়িত্বপালনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে এবং সহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ তাতে সহায়তা প্রদান করবে। প্রতি মন্ত্রণালয়ে ‘নৈতিকতা কমিটি’ ও ‘শুদ্ধাচার ফোকাল পয়েন্ট’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। তারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শুদ্ধাচার ও দুর্নীতি দমন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে এবং পরিবীক্ষণ করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এই প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থার সচিবালয় হিসাবে কাজ করবে এবং সার্বিকভাবে সকল কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করবে। দুর্নীতি দমন ও শুদ্ধাচারকে স্বীকৃতি প্রদান ও উৎসাহিতকরণের জন্য ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ প্রবর্তন করা হবে। সেই লক্ষ্যে নির্বাহী বিভাগ, ব্যবসায় খাত ও সুশীল সমাজে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নে যারা উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবেন, তাদের জন্য সরকার বার্ষিক পুরস্কার প্রবর্তন করবে।
৯. এই কৌশলটির রূপকল্প (vision) হচ্ছে সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা। বাংলাদেশ ও তার সংগ্রামী মানুষের এটিই হল কাঙ্খিত গন্তব্য। সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য রাষ্ট্র, তার প্রতিষ্ঠানসমূহে ও সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করবে তা-ই প্রত্যাশিত। শুদ্ধাচার কৌশলকে এ প্রত্যাশা পূরণের একটি অবলম্বন হিসাবে প্রণয়ন করা হয়েছে। আশা করা যায় যে, এই কৌশলটির অনুসরণ ও বাস্তবায়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে জনগণ ও জাতির পিতার স্বপ্ন ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠায় কার্যকর অবদান রাখবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস